ময়ূরী আবাসিক প্রকল্পঃ খুলনা নগরীতে আবাসনের নতুন মাত্রা
মারিয়া সুলতানা সিথি, খুলনা থেকে
পদ্মা সেতু ও খুলনা-মংলা রেলওয়ে নির্মাণ প্রকল্প শুরু হওয়ার সাথে সাথে খুলনা নগরীতে এসেছে উন্নয়নের নতুন জোয়ার। নানারকম উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ শহরটির পশ্চিমপ্রান্তে সোনাডাঙা বাইপাস রোডের কোলঘেষে ৯০ একর জমির উপর গড়ে তুলেছে এক দৃষ্টিনন্দন ও অত্যাধুনিক আবাসিক প্রকল্প।এটি ময়ূর নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় নামকরণ করা হয়েছে “ময়ূরী আবাসিক এলাকা”।
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) সূত্রে জানা গেছে, প্রায় প্রায় দীর্ঘ ১৯ বছর পর খুলনায় নতুন আবাসিক এলাকা তৈরির প্রকল্প হাতে নেয় সংস্থাটি। রূপসা সেতু বাইপাস সড়কের পশ্চিমপাশে ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় নতুন এই আবাসিক এলাকা তৈরি হচ্ছে। এই প্লট বিক্রির জন্য ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট থেকে আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে কেডিএ। তারপরও প্রায় এক বছর পর ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর লটারির মাধ্যমে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
কেডিএ সূত্রমতে এই প্রকল্পে ৩ কাঠার ৩৮৪ টি ও ৫ কাঠার ২৬৯ টি; সর্বমোট ৬৫৩ টি প্লট রাখা হয়েছে। ২০১২ সালে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় কেডিএ। শতভাগ জমির মধ্যে ৫৭.৩৬% আবাসিক প্লট যার ৯.২৬% ফ্ল্যাটের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়াও ৭.৮৫% বাণিজ্যিক প্লট এবং বাকি অংশটুকু রাখা হয়েছে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার উদ্দেশ্যে।
এ প্রকল্পে বরাদ্দ থাকছে ধর্মীয় স্থানের জন্য ৩টি, খেলার মাঠের জন্য ২টি, পার্ক ও ফাঁকা জায়গার জন্য ৭টি, শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ২টি জায়গা। এছাড়াও আছে মার্কেট, সাস্থ্যসেবা,পানির পাম্প হাউসের জায়গা, কমিউনিটি সেন্টার, পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার, ময়লা পানি শোধনাগার, কবরস্থান ইত্যাদির ব্যবস্থা।
এখানে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এমন অনেক সুবিধার ব্যবস্থা করেছে যা আগে কখনো নগরটির কোনো আবাসিক প্রকল্পে দেখা যায়নি। লেকের পাশ দিয়ে মানুষের জন্য হাঁটার পথের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যা বিনোদন ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে এক অনন্য রূপ দিবে। বলা হয়েছে, এই আবাসিক এলাকাতে এমন অনেক দৃষ্টিনন্দন ব্যবস্থা আছে যা অনেকটা ধানমন্ডি লেকের অবয়ব তুলে ধরতে পারে। এখানে আছে সুবিশাল রাস্তা এবং প্রধান প্রবেশধারটি প্রায় ১২০ ফুট চওড়া রাখা হয়েছে যা এখনও খুলনার কোনো আবাসিক এলাকাতে নেই। কেডিএ নগর পরিকল্পনাবিদ তানভীর আহমেদ আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে যত রকম সুবিধা লাগে সবকিছুর সমন্বয়ে একটি আধুনিক প্রকল্প ডিজাইন করা হয়েছে। সেই সাথে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত পরিবেশ বান্ধব ও স্বাস্থ্যকর একটি আবাসিক প্রকল্প হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। আমরা নগর পরিকল্পনার পেক্ষাপটে বিবেচনা করলে এটি অন্যতম একটি আদর্শ ও অনুকরন যোগ্য প্রকল্প। বর্তমানে প্রকল্পটির কাজ প্রায় শেষ হতে চলেছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী বছরের মধ্যে সকল গ্রাহকের কাছে সফলভাবে প্লট হস্তান্তর করা সম্ভব হবে।