বি.আই.পি.’র বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২১ ও ১৫ তম বোর্ডের দ্বায়িত্ব গ্রহণ

নগর দর্পণ ডেস্কঃ

বাংলাদেশের পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপর অধি গুরুত্বারোপ করা দরকার। টেকসই ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে উপজেলা পর্যায়ে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে শহর ও গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের যে উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হচ্ছে তাতে পরিকল্পনাবিদদের সম্পৃক্ত থাকা অত্যাবশকীয়। অদ্য ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ (শুক্রবার), সকাল ১০.০০ টায় ঢাকাস্থ প্ল্যানার্স টাওয়ারে বি.আই.পি. মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি.)-র বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২১ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত পরিকল্পনাবিদগণ এমন মন্তব্য করেন।

 

বি.আই.পি.-র ১৪তম কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড.আদিল মুহাম্মদ খান ২০২১ সালে বি.আই.পি.-র বিভিন্ন কর্মকান্ড সম্পর্কে একটি বিশদ প্রতিবেদন পাঠ করেন। তিনি বলেন, তিনি বলেন, পরিকল্পনা পেশার প্রকৃত অনুশীলন নিশ্চিত করবার মাধ্যমে উন্নয়নের সুফল সমাজের সকল শ্রেনী পেশার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। ফলে পরিকল্পনাবিদদের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে পেশাগত দায়বদ্ধতার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে সমাজ বিনির্মাণে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় নগর ও গ্রামীন পরিকল্পনাবিদদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব যেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সঠিক পথে পরিচালিত হয় বলে মন্তব্য করেন ড. আদিল মুহাম্মদ খান।

 

উপস্থিত পরিকল্পনাবিদ সদস্যদের সামনে বি.আই.পি.-র কোষাধ্যক্ষ পরিকল্পনাবিদ তৌফিকুল আলম বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে বি.আই.পি.-র আয়-ব্যয়ের পর্যালোচনা পূর্বক পূর্ণাঙ্গ আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

 

বি.আই.পি. উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালাম  উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তাঁর উপস্থাপিত প্রতিবেদনে পরিকল্পনা বিষয়ক নীতি নির্ধারণী ক্ষেত্রে বি.আই.পি.-র ভূমিকা রাজউক কর্তৃক প্রণীতব্য বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (২০১৬-২০৩৫) প্রক্রিয়ায় বি.আই.পি.-র অংশগ্রহণ,দেশে মহাপরিকল্পনা প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শক্তিশালিকরন,পরিকল্পনাবিদদের কর্মসংস্থান, বি.আই.পি.-র গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা এবং আগামী বছরগুলোতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বি.আই.পি.র কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

বি.আই.পি.-র সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, পেশাগত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সবসময়ই একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যা কালের পরিক্রমায় নানামুখী চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াসে লিপ্ত। প্রবীণ পরিকল্পনাবিদদের অভিজ্ঞতা এবং নবীন পরিকল্পনাবিদদের উদ্যমকে পাথেয় করে সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশে পেশা হিসেবে নগর পরিকল্পনা বিকাশ লাভ করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমে সম্মানিত সদস্যবৃন্দের কার্যকর অংশগ্রহণ ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বিশেষ জরুরী। এ লক্ষ্যে দেশের সকল পেশাজীবী পরিকল্পনাবিদদের সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকবার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও এ সময় তিনি ১৪তম নির্বাহী পরিষদ এর ২০২১ সালের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ড সম্পর্কে আলোকপাত করে এবং বছরজুড়ে আয়োজিত সকল কর্মকান্ডে সদস্যদের সক্রিয় উপস্থিতির জন্য বি.আই.পি.’র সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং একইসাথে নবনির্বাচিত ১৫তম নির্বাহী পরিষদ সকলের সুচিন্তিত মতামত নিয়ে এবং ১৪তম পরিষদের সকল অর্জনকে পাথেয় করে বি.আই.পি. কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

পরিকল্পনাবিদ মাসুম মুজিব পরিকল্পনাবিদ সঠিক পদায়ন এবং পরিকল্পনা পেশার মর্যাদা বৃদ্ধিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। পরিকল্পনাবিদ আমানুর রহমান পরিবেশগত দিক বিবেচনায় বি.আই.পি. কার্যালয়ে কার্বন ফ্রী পরিবেশ সৃষ্টি করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। পরিকল্পনাবিদ আব্দুস সালাম পরিকল্পনাকে একটি সামাজিক পেশা হিসেবে অভিহিত করে, সকল ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ডে পরিকল্পনাবিদদের নেতৃত্ব প্রদানের গুরুত্ব তুলে ধরেন। পরিকল্পনাবিদ খোন্দকার এম আনসার হোসেন ইনস্টিটিউট এর সকল কর্মকান্ডে প্রবীণ এবং জ্যেষ্ঠ পরিকল্পনাবিদ সদস্যদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাহী বোর্ড কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। বি.আই.পি.’র নবনির্বাচিত সভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন বি.আই.পি.’র স্থানীয় অধ্যায় সমূহকে আরও বেশি সক্রিয় হবার বিষয়ে আলোকপাত করেন। পরিকল্পনাবিদ আবু নাঈম সোহাগ সকল ক্ষেত্রে পরিকল্পনাবিদদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি,এবং সকলস্তরের মানুষের পরিকল্পনার গুরুত্ত্ব ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারক পর্যায়ের মানুষের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও আগামী দিনের বাংলাদেশে বাসযোগ্য নগর ও জনবসতি গড়ে তুলবার লক্ষ্যে পরিকল্পনাবিদদের কাজ করার সুযোগ বাড়াতে হবে এবং এই পেশার মর্যাদা বৃদ্ধি সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে বলে সভায় উপস্থিত পরিকল্পনাবিদ্গণ মতামত প্রদান করেন।

 

সাধারণ সভার শেষে ইনস্টিটিউট এর বিদায়ী সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ নবনির্বাচিত সভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে সুমন এর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাহী বোর্ড এর দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স-র যুগ্ম সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ রাসেল কবির এর সঞ্চালনায় বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স-র সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ।

 



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

RSS
Follow by Email