বি.আই.পি.-র ১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ (২০২২-২০২৩) এর অভিষেক এবং জ্যেষ্ঠ পরিকল্পনাবিদদের সংবর্ধনা
নিউজ ডেস্কঃ
গতকাল ২২ জানুয়ারি ২০২২ (শনিবার), বিকাল ০৪.৩০টায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি.) এর ‘১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ এর অভিষেক’ এবং নগর পরিকল্পনা পেশা, গবেষণা ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘জ্যেষ্ঠ পরিকল্পনাবিদদের সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠান যথাযথভাবে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি এবং অনুশাসন অনুসরণপূর্বক ঢাকাস্থ প্ল্যানার্স টাওয়ারে বি.আই.পি. কনফারেন্স হলরুম এ অনুষ্ঠিত হয়।
বি.আই.পি.’র সভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর মাননীয় মেয়র জনাব মোঃ আতিকুল ইসলাম। এছাড়াও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং বি.আই.পি.’র সাবেক সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত্য বক্তব্য প্রদান করেন ইনস্টিটিউট এর যুগ্ম সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ রাসেল কবির। অতঃপর নবনির্বাচিত ১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ এর পক্ষ থেকে বিগত ১৪তম কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্যদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন তার বক্তব্যের শুরুতেই অনুষ্ঠানের প্রধান অথিথি এবং বিশেষ অতিধিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বি.আই.পি.’র সকল সম্মানিত সদস্যগেদর ভালোবাসা এবং অগ্রজদের দোয়া নিয়ে ১৫তম বোর্ডের কার্যক্রম সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এছাড়াও তিনি বিগত বোর্ড সমূহের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখে আগামী দুই বছর সকলকে সাথে নিয়ে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মাধ্যমে ইনস্টিটিউট পরিচালনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং একইসাথে সকলকে সাথে নিয়ে দেশের টেকসই এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকারকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার করেন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সাবেক সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ পরিকল্পনাবিদদের কাজের যথাযথ মূল্যায়ন এবং পরিকল্পিত উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর মাননীয় মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়াও তিনি নবনির্বাচিত ১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ এর সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের মাধ্যমে ইনস্টিটিউট এর আগামী দিনগুলোতে সফলতা কামনা করেন।
পরবর্তীতে ১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্যগণের শপথ বাক্য পাঠের মাধ্যমে নবনির্বাচিত পরিষদের অভিষেক সম্পন্ন হয়। শপথ বাক্য পাঠ করান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর প্রাক্তন সহ-সভাপতি এবং প্রাক্তন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. রুখসানা হাফিয।
নবনির্বাচিত বোর্ড সদস্যদের অভিষেক শেষে ইনস্টিটিউট এর সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান ১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ এর দ্বি-বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ অনুযায়ী ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় জাতীয় পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর ভূমিকার উপর ভিত্তি করে বি.আই.পি.’র ভিশন-২০৪১, মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনার রূপরেখা ২০৩০ এবং ২০২২-২০২৩ সালের দ্বি-বার্ষিক কর্ম পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। এই দ্বি-বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা চারটি স্তম্ভের সমন্বয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে, যথা (১) সুষ্ঠু নগর পরিকল্পনার চর্চা, (২) নগর, অঞ্চল ও গ্রামীণ পরিকল্পনাবিদদের ক্ষমতায়ন, (৩) পরিকল্পনা শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচী এবং (৪) বি.আই.পি.’র প্রতিষ্ঠানিক উন্নয়ন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, সুষ্ঠু নগর পরিকল্পনায় নগর পরিকল্পনাবিদদের সম্পৃক্ততার গুরুত্বের উপর আলোকপাত করেন। তিনি তার বক্তব্যে নগর পরিকল্পনায় বর্তমান সরকার এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে মাথাপিছু আয়, কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও দেশের নগর এলাকার পাশাপাশি সকল উপজেলা এবং গ্রাম সমূহকে সুষ্ঠু পরিকল্পনার আওতায় আনতে হবে, এজন্য সকলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর মাননীয় মেয়র জনাব মোঃ আতিকুল ইসলাম নগরের সামগ্রিক উন্নয়নে নগর পরিকল্পনাবিদদের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন এবং একইসাথে পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে গণপরিসর বৃদ্ধিসহ সকলকে নিয়ে নগর গড়ার আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি নবনির্বাচিত ১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ এর সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করেন।
এরপর অনুষ্ঠানে বি.আই.পি.’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান মহোদয় কে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর পক্ষ থেকে ‘আজীবন সম্মাননা’ সহ নগর পরিকল্পনা পেশা, গবেষণা ও শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আঠারো (১৮) জন জ্যেষ্ঠ পরিকল্পনাবিদ কে ‘বিশেষ সম্মাননা’ প্রদান করা হয়। জ্যেষ্ঠ পরিকল্পনাবিদগণের পক্ষে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বি.আই.পি.’র প্রাক্তন সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. সারোয়ার জাহান।
জ্যেষ্ঠ পরিকল্পনাবিদগণ দেশের পরিকল্পনাবিদগণের জাতীয় পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স কে আস্থার জায়গা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নবনির্বাচিত ১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ এর সকল সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান এবং সকলকে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে ইনস্টিটিউট এর কার্যক্রম আরও গতিশীল করার করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, বিগত ১৯ নভেম্বর ২০২২ তারিখে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি.)-র ১৫তম কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট এবং সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন এবং পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান নির্বাচিত হন। ভাইস প্রেসিডেন্ট ১ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ২ পদে নির্বাচিত হন যথাক্রমে পরিকল্পনাবিদ মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম এবং পরিকল্পনাবিদ মোঃ শফিক-উর রহমান। এছাড়াও যুগ্ম সম্পাদক পদে পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ রাসেল কবির; ট্রেজারার পদে পরিকল্পনাবিদ মুঃ মোসলেহ উদ্দীন হাসান; বোর্ড মেম্বার (প্রফেশনাল এফেয়ার্স) পদে পরিকল্পনাবিদ তামান্না বিনতে রহমান; বোর্ড মেম্বার (একাডেমিক এফেয়ার্স) পদে পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম; বোর্ড মেম্বার (রিসার্চ এন্ড পাবলিকেশন) পদে পরিকল্পনাবিদ রেজাউর রহমান; বোর্ড মেম্বার (ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল লিয়াঁজো) পদে পরিকল্পনাবিদ মুহাম্মদ হামিদুল হাসান নবীন এবং বোর্ড মেম্বার (মেম্বারশীপ এফেয়ার্স) পদে পরিকল্পনাবিদ কাজী সালমান হোসেন নির্বাচিত হন।